বাংলাদেশ বর্তমানে আদানি পাওয়ারের (Adani Power) ঝাড়খণ্ডের গোডা পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার (৭,৫০০ কোটি টাকার বেশি) বাকি রয়েছে বলে জানিয়েছে কোম্পানির একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।
আদানি পাওয়ারের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) দিলীপ ঝা সোমবার ত্রৈমাসিক আয় নিয়ে বিশ্লেষকদের সঙ্গে আলোচনায় বলেন, “এখন পর্যন্ত আমাদের মোট বিলিং প্রায় ২,০০০ মিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে আমরা ১,২০৭ মিলিয়ন ডলার পেয়েছি এবং ১৩৬ মিলিয়ন ডলার লেট পেমেন্ট সারচার্জ (LPS) বিল করা হয়েছে।” তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া রয়েছে, যার মধ্যে LPS-ও অন্তর্ভুক্ত।
ঝাড়খণ্ডে আদানি পাওয়ারের আল্ট্রা-সুপারক্রিটিক্যাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত সমস্ত বিদ্যুৎ ১৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ ৪০০ কেভি ডাবল সার্কিট ট্রান্সমিশন লাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশে রপ্তানি করা হয়। এই প্ল্যান্টের প্রথম ৮০০ মেগাওয়াট ইউনিট চালু হয় ২০২৩ সালের ৬ এপ্রিল, এবং দ্বিতীয় ইউনিট চালু হয় ২৬ জুন, ২০২৩।
আদানি পাওয়ারের প্রধান নির্বাহী এসবি খায়ালিয়া বলেন, কোম্পানি বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে এবং সরবরাহ বন্ধ করার মতো কোনো সমস্যার কথা তারা কখনও উল্লেখ করেনি। তিনি জানান, মার্চ কোয়ার্টারে বাংলাদেশের বকেয়া প্রায় ৫০০ কোটি টাকা কমেছে এবং এখন মাসিক বিলিংয়ের চেয়ে বেশি পরিমাণ অর্থ পাচ্ছে আদানি পাওয়ার।
এই অর্থবছরে আদানি পাওয়ারের ১৩,৩০৭ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে, যা গত বছরের ৮,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের তুলনায় অনেক বেশি। এর মধ্যে রয়েছে মাহান ফেজ-২ ও ৩, রায়গড় ফেজ-২, রায়পুর ফেজ-২, মির্জাপুর, কাওয়াই ফেজ-২ এবং কোর্বা ফেজ-২ ও ৩ প্রকল্পের সম্প্রসারণ।
পরবর্তী ছয় বছরে কোম্পানি ১.২ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে। ইতিমধ্যেই ১১.২ গিগাওয়াট ক্ষমতার আল্ট্রা-সুপারক্রিটিক্যাল বয়লার, টারবাইন ও জেনারেটর-এর অর্ডার দেওয়া হয়েছে।
আদানি পাওয়ারের বর্তমান উৎপাদন ক্ষমতা ১৭.৫৫ গিগাওয়াট, যা ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০.৬৭ গিগাওয়াট করার লক্ষ্য রয়েছে। এটি হবে বেসরকারি খাতে সবচেয়ে বড় সম্প্রসারণ। অন্যদিকে, সরকারি খাতে এনটিপিসি আগে ২৬ গিগাওয়াটের পরিকল্পনার পাশাপাশি ২০৩২ সালের মধ্যে আরও ৩০ গিগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ ক্ষমতা যোগ করার পরিকল্পনা করেছে।